ধোঁয়াশা কি ? আলোক রাসায়নিক ধোঁয়াশা কি ?

ধোঁয়াশা কি বা আলোক রাসায়নিক ধোঁয়াশা কি এই 'বিজ্ঞান লেখ' এর আলোচ্য বিষয় -ধোঁয়া আর কুয়াশা মিলে হয় ধোঁয়াশা এটি হলো একপ্রকার বায়ুদূষক।

ধোঁয়াশা কি ?

ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন বায়ুস্তরের, জলীয় বাষ্প ঘনীভবনের ফলে সৃষ্ট কুয়াশা এবং কলকারখানা, জ্বালানি, মোটরগাড়ি ইত্যাদি থেকে নিঃসৃত ধোঁয়ায় উপস্থিত SO2, NO2 ইত্যাদি গ্যাসীয় পদার্থের মিশ্রণে যে তমসাচ্ছন্ন পরিবেশ সৃষ্টি হয়, তাকেই সাধারণ ধোঁয়াশা বা ধোঁয়াশা  বলে।

ধোঁয়াশা অর্থ :


ধোঁয়াশা অর্থ =>


ধোঁয়া + কুয়াশা = ধোঁয়াশা


ধোঁয়াশার কারণে কোন রোগ হয় :


ধোঁয়াশার কারনে যে রোগ হয় : অ্যালার্জি হয় এবং নাসারন্ধ্র বন্ধ হয়ে যায়, হাঁচি ও কাশি হয়।ব্রংকাইটিস, অ্যাজমা, হাঁপানি ইত্যাদি শ্বাসকষ্টজনিত রোগ হয়। হৃদযন্ত্রের বৈকল্যতা দেখা যায়।


ধোঁয়াশার ক্ষতিকারক প্রভাবসমূহ :

  1. ধোঁয়াশার ফলে অ্যালার্জি হয় এবং নাসারন্ধ্র বন্ধ হয়ে যায়, হাঁচি ও কাশি হয়।
  2. ব্রংকাইটিস, অ্যাজমা, হাঁপানি ইত্যাদি শ্বাসকষ্টজনিত রোগ হয়। 
  3. হৃদযন্ত্রের বৈকল্যতা দেখা যায়।
  4. ধোঁয়াশাজনিত তমসাচ্ছন্ন পরিবেশে ট্রেন ও মোটরগাড়ির চালকদের দৃষ্টিশক্তি বাধাপ্রাপ্ত হয়, ফলে প্রচুর দুর্ঘটনা ঘটে।

ধোঁয়াশা english meaning / ধোঁয়াশা in english

=> ধোঁয়াশা english meaning "the haze"

ধোঁয়াশা কি,  আলোক রাসায়নিক ধোঁয়াশা কি

আলোক রাসায়নিক ধোঁয়াশা কী ? 


উজ্জ্বল সূর্যালোকে দুপুরের দিকে বায়ুর অক্সিজেন, মোটরগাড়ি থেকে নিঃসৃত ধোঁয়ার মধ্যে উপস্থিত NO2, হাইড্রোকার্বনসমূহ ও অন্যান্য গ্যাসীয় পদার্থের পারস্পরিক বিক্রিয়ায় উৎপন্ন ওজোন গ্যাস (O3), পারক্সি অ্যাসাইল নাইট্রেট (PAN), অ্যালডিহাইড ও কিটোন জাতীয় পদার্থ প্রভৃতি বায়ুর সঙ্গে মিশে যে ধোঁয়াশার সৃষ্টি করে, তাকে আলোক-রাসায়নিক ধোঁয়াশা বলে। 


এটি প্রকৃতপক্ষে কোনো ধোঁয়াশা নয়, কারণ এতে কোনোপ্রকার ধোঁয়া থাকে না। এতে O3, O2, PAN ইত্যাদি জারক দ্রব্য উপস্থিত থাকায় একে জারক ধোঁয়াশাও বলে।


আরও জানুনঃ অ্যাসিড বৃষ্টি কি ? কীভাবে হয়? প্রভাব


আলোক-রাসায়নিক ধোঁয়াশার ক্ষতিকারক প্রভাবসমূহঃ


মানুষের ওপর প্রভাবঃ


  1. O₃,PAN ইত্যাদি উপস্থিত থাকায় চোখ ও নাক জ্বালা করে এবং জল ঝরে। নাসারন্ধ্র বন্ধ হয়ে যায়, হাঁচি ও কাশি হয়। 
  2. শ্বাসকষ্ট এবং বুকে ব্যথা অনুভূত হয়। 
  3. এই ধোঁয়াশার বর্ণ বাদামি হওয়ায় গাড়ির চালক ও প্লেনের পাইলটদের দৃষ্টিশক্তি বাধাপ্রাপ্ত হয়, ফলে দুর্ঘটনা বাড়ে।


উদ্ভিদের ওপর প্রভাবঃ

  1. উদ্ভিদের ক্লোরোসিস ও নেক্রোসিস রোগ দেখা দেয়।
  2. পত্ররন্দ্রে কার্বন কণা জমে যাওয়ায় সালোকসংশ্লেষ ও ৰাষ্পমোচন প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হয়। এর ফলে উদ্ভিদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।


অন্যান্য প্রভাবঃ


রবারের স্থিতিস্থাপকতা নষ্ট হয় এবং ভঙ্গুর হয়। এর ফলে মোটরগাড়ির টায়ারে চিড় ধরে এবং আয়ুষ্কাল কমে যায়।

ধোঁয়াশা ও আলোক রাসায়নিক ধোঁয়াশার তুলনাঃ

ধোঁয়াশা 

আলোক-রাসায়নিক ধোঁয়াশা

১.কলকারখানা ও মোটরগাড়ি থেকে নির্গত গ্যাসীয় পদার্থসমূহ (SO₂,NO₂,CO ইত্যাদি) ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন বায়ুতে উপস্থিত জলীয় বাষ্প ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দূষিত কণার সঙ্গে মিশে একত্রে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করে।

সূর্যালোকের উপস্থিতিতে বায়ুর অক্সিজেন, মোটরগাড়ি থেকে নির্গত NO₂ এবং হাইড্রোকার্বন যৌগসমূহ ও PAN পারস্পরিক মিশ্রণে আলোক-রাসায়নিক ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়।

২.সাধারণত শীতকালে সন্ধ্যা থেকে পরের দিন ভোর বা সকাল পর্যন্ত দেখা য়ায়।

২.সূর্যালোকের উপস্থিতিতে দুপুরবেলায় দেখা য়ায়।

৩.সাধারণ ধোঁয়াশা বিজারণধর্মী।

৩.আলোক-রাসায়নিক ধোঁয়াশা জারণধর্মী।

৪.ক্ষতিকারক প্রভাবঃ ব্রংকাইটিস, শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, অ্যালার্জি।

৪.ক্ষতিকারক প্রভাবঃ চোখ, নাক ও গলা জ্বালা করে।




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন